
ডেস্ক রিপোর্ট::
উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ‘সোনারপাড়া রিসোর্ট’ পরিচিত নাম। নানা কারণে এটিকে চেনে না এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। রিসোর্টটির মালিকের নাম ফরিদুল আলম ওরফে এমপি ফরিদ। বছর তিনেক সময়ে সোনারপাড়া রিসোর্ট বেশ আলোচিত সমালোচিত।
স্থানীয়দের অভিযোগ মতে -জুয়ার আসর, নারীদের দেহ ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোন অবৈধ কাজ নেই যা সোনারপাড়া রিসোর্টে হয় না। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিয়মিত জুয়ার আসরে মগ্ন থাকে এখানে। দিনদুপুরে বসানো হয় মাদকের আড্ডা। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার ক্যাসিনো আসর পরিচালিত হয়। যাবতীয় অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ স্থান হিসেবে সোনারপাড়া রিসোর্ট কুখ্যাতি পেয়েছে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, রিসোর্ট মালিক ফরিদুল আলমের সাথে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের গভীর সখ্যতা। তাদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অবৈধ ব্যবসা চালানো হয়। রোহিঙ্গা রমনীদের ভাড়ায় রাখা হয় এই রিসোর্টে। গভীর রাতে মাদকের আসর ও নারীদের রঙ্গশালা বসায় চিহ্নিত অপরাধীরা। স্থানীয় প্রশাসন জেনেও ‘না জানার ভান’ ধরে থাকে, তাই বেপরোয়া রিসোর্ট চালকরা।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ আবুল মনসুর জানান, সোনারপাড়া রিসোর্টের বিরুদ্ধে বিতর্ক রয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে, দীর্ঘদিনের অভিযুক্ত সোনারপাড়া রিসোর্টে গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ি। এ সময় নগদ টাকা, জুয়ারসরঞ্জামসহ ৮ জুয়াড়ি ও ২ এনজিও কর্মী আটক হয়।
আটকরা হলেন -উপজেলার জালিয়াপালংয়ের মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে নাজির হোসেন (৩৫), আলী আকবরের ছেলে ছলিম উল্লাহ (৪০), সফিউল আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন (২৫), ছিদ্দিক আহমদের মেয়ে খুরশিদা বেগম (২০), হাজী হোসেন আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (৬০), মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে কায়ছার হামিদ (২০), মৃত মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে শামশুল আলম (৬০), মৃত মকবুল আহমদের ছেলে মোহাম্মদ হোসাইন (৪৫), রশিদ আহমদের ছেলে শাহা আলম (৪০) ও সোনারপাড়া ইউছুপ আলী মেম্বারের ছেলে আবুল কালাম (৫২)।
ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিদ্ধার্থ শাহা জানিয়েছেন, সোনারপাড়া রিসোর্টে জুয়ার আসরসহ অবৈধ কর্মকান্ডের ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। পুলিশ অভিযানের আগেই সরে পড়ে অপরাধিরা।
তিনি জানান, জুয়া ও অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সোমবার অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ১০ জনকে আটক করা হয়। যেখানে ৮ জন জুয়াড়ি ও এক প্রেমিক যুগল রয়েছে। উদ্ধার হয় নগদ ৮৭ হাজার টাকা, তাজ ও বিভিন্ন জুয়ার সরঞ্জামাদি। আটককৃতেদর ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে রিসোর্ট মালিক ফরিদুল আলম ওরফে এমপি ফরিদ মুঠোফোনে জানান, জমিজমার বিরোধ নিয়ে কয়েকজন প্রতিপক্ষ মিলে এসব রটাচ্ছে। তার হোটেলে এই রকম কোন অপরাধ হয় না। তবে, সোমবার জুয়াড়ি ও প্রেমিক যুগল আটকের কথা স্বীকার করেছেন ফরিদ। সুত্র : দৈনিক সাঙ্গু
পাঠকের মতামত